নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন এলাকায় একটি ভুট্রা ক্ষেতে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে আব্দুর রহীমকে।
স্ত্রীর সাথে প্রবাসী রায়হানের প্রেম ও বন্ধকীজমির টাকাই জীবনের কাল হয়ে দাড়ায় আব্দুর রহীমের। আর বিদেশে থেকে হত্যার নীল নকশা করে পরকিয়া প্রেমিক রায়হান। খুনের পরামর্শ দেয় চাচাতো ভাই হান্নান ও নিজের ছেলে লিটনকে। তাও আবার ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে ঠিক করে।
মঙ্গলবার (৩১মে) দুপুরে গুরুদাসপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো: জামিল আক্তার সিংড়া সার্কেল।
তিনি বলেন, পরকীয়া প্রেমসহ জমি বন্ধকের টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে মোটর সাইকেলের ক্লাসের তারদ্বারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় আব্দুর রহীমকে। আসামী বিপ্লবের স্বীকারোক্তীমূলক জবান বন্ধিতে এ ঘটনা জানাযায়।
হত্যার রহস্য উম্মোচনে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা পিপি এমবার এর নির্দেশনা ও তত্বাবধানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ জামিল আক্তারের নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামীদের সনাক্ত করা হয়।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস এই মোঃ আকরামুজ্জামানের সমন্বয়ে পৃথক ৩টি টিম বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে খুনের ৭ দিনের মধ্যেই হত্যার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও ভাড়াটিয়া খুনি বিপ্লব, হান্নান সরকার ও লিটন সরকারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ প্রশাসন।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, প্রবাসী রায়হান তার পূত্র লিটন সরকার (১৯), চাচাতো ভাই আব্দুল হান্নানের (৪১) কাছে খুনের পরিকল্পনার কথা বলেন।
রায়হানের দিক নির্দেশনা মোতাবেক খুনের জন্য লিটন ও হান্নান ভাড়াটে খুনি খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের মাদকাসক্ত বিপ্লবের (৩৫) সাথে ১০ হাজার টাকায় খুনের চুক্তি হয় আব্দুর রহিমকে খুন করার জন্য। এতে রাজি হন বিপ্লব। এক পর্যায়ে পৃর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ২৪ মে নাজিরপুর কলেজ গেট থেকে পতিতা নারীর প্রলোভন দেখিয়ে আব্দুর রহিমকে ভুট্টা খেতে নিয়ে যান বিপ্লব, হান্নান ও লিটন। সেখানে প্রথমে হান্নান রহিমকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে পা চেপে ধরেন। এরপর ভাড়াটিয়া খুনি বিপ্লব দুই হাত ধরে বুকের ওপর ওঠে বসেন। এসময় মোটরসাইকেলের ক্লাসের তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন লিটন।
ওসি বলেন, প্রথমে ভাড়াটে খুনি বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশ অপর দুইজনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানে হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ মে উপজেলার নাজিরপুরে একটি ভুট্রার ক্ষেতে খুন হন এই এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহীম (৪৫)। ২৫ মে গুরুদাসপুর থানার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাশ উদ্ধার করেন। এ বিষয় আব্দুর রহীমের ভাই আব্দুর রহমান গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।